জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা: প্রধান অভিযুক্ত মাহির গ্রেফতার, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জোবায়েদ হোসেন (২২) হত্যাকাণ্ডের প্রধান

অভিযুক্ত মাহির রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (২০ অক্টোবর) ভোরে মাহিরের মা   নিজেই    তাকে

ঢাকার বংশাল থানায় নিয়ে এসে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

জোবায়েদের    পরিবারের   করা  অভিযোগের      ভিত্তিতে   মাহিরকে   শনাক্ত  করা   হয় । তবে   হত্যার   ঘটনার

প্রায়  একদিন  পেরিয়ে  গেলেও   এখনো  মামলা  হয়নি       বলে    অভিযোগ  করেছেন  নিহতের   স্বজনরা।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলা  টিউশনি  করতে  গেলে  খুন  হন  জোবায়েদ।  তিনি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীজবি ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ জানায়, ওইদিন বিকেল  ৪টা ৪৫  মিনিটে  আরমানিটোলার  পানির  পাম্প  গলির  ‘রওশন   ভিলা’    নামের

ভবনের সিঁড়ি থেকে রক্তাক্ত  অবস্থায়  তার  মরদেহ  উদ্ধার  করা  হয় ।  সিসিটিভি  ফুটেজে  দুই  তরুণকে  দৌড়ে

পালাতে দেখা গেলেও তাদের মুখ পরিষ্কারভাবে শনাক্ত করা যায়নি। নিহতের বড় ভাই  এনায়েত  হোসেন  সৈকত

বলেন,
“আমরা  পাঁচজনকে  আসামি   করে   মামলা  করতে  চেয়েছিলাম  — শিক্ষার্থী  বর্ষা,  তার  বাবা-মা,  বর্ষার প্রেমিক

মাহির রহমান এবং মাহিরের বন্ধু নাফিসকে।  কিন্তু  বংশাল  থানার  ওসি  মামলা  নিতে  অস্বীকৃতি  জানান । তিনি

বলেন, এতজনের নাম দিলে মামলা হালকা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা পূর্ণাঙ্গ বিচার চাই।”

এ বিষয়ে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান,
“তারা যাদের নাম দিতে চান, সেই নামেই  মামলা  নেওয়া  হবে ।  শুধু  পরামর্শ  দিয়েছিলাম  যেন  বিশ্ববিদ্যালয়ের

শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন।”

ঘটনার পর শিক্ষার্থী বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। রোববার রাত  ১১টার  দিকে  তাকে

থানায় এনে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।


শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

এই হত্যাকাণ্ডের পর উত্তাল হয়ে ওঠে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় । শিক্ষার্থীরা  বংশা ল থানার  সামনে  অবস্থান  নিয়ে

দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে স্লোগান দেন। তাঁতিবাজার মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে  বিক্ষোভ  করেন  এবং

কিছু সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই দিনের শোক ঘোষণা

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিহত শিক্ষার্থীর স্মরণে দুই দিনের শোক ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি

২২ অক্টোবর নির্ধারিত “বিশ্ববিদ্যালয় দিবস”-এর সব আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে।


ক্যাম্পাসে শোক ও ক্ষোভের আবহ

পুরো ক্যাম্পাসে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শিক্ষার্থীরা বলছেন,
“জোবায়েদের রক্তের বিচার চাই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া ক্লাসে ফিরবো না।”