আশির দশকের জনপ্রিয় নায়ক এবং ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন দীর্ঘ সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। প্রায় ছয় মাস ধরে তিনি লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা নিচ্ছেন । সম্প্রতি তার ব্রেন টিউমারের জটিল অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গত ৫ আগস্ট (রোববার) লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালে অধ্যাপক ডিমিট্রিয়াসের নেতৃত্বে তার মাথায় রোবোটিক সার্জারি করা হয়। আধুনিক এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে মানব চিকিৎসকের পাশাপাশি রোবট একসঙ্গে কাজ করে, ফলে মানবিক ভুলের ঝুঁকি কমে যায় এবং রোগীর শরীর দ্রুত সেরে ওঠে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই অপারেশনে একসঙ্গে তিনটি রোবট ব্যবহার করা হয়েছে। অপারেশন সফল হওয়ায় এখন চলছে চিকিৎসার দ্বিতীয় ধাপ । বর্তমানে ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডনে তার মেয়ের জামাই আরিফুল ইসলামের বাসায় অবস্থান করছেন। আরিফুল ইসলাম জানান,
“আব্বুর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। সপ্তাহে পাঁচ দিন হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রেডিওথেরাপি দিতে হচ্ছে, যা ‘টার্গেট থেরাপি’ নামে পরিচিত । পাশাপাশি চলছে ওরাল কেমো । এই চিকিৎসা মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।” তিনি আরও বলেন,
“রেডিওথেরাপি শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পরই আসল ফলাফল বোঝা যাবে । তার আগ পর্যন্ত চিকিৎসা চলতেই থাকবে।” বর্তমানে অভিনেতা খুব বেশি কথা বলেন না । প্রয়োজন ছাড়া তিনি কথা বলতে চান না , কারণ কথা বললে তাকে কষ্ট হয়। সার্জারির আগেই তিনি কথা বলা কমিয়ে দিয়েছিলেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আরিফুল ইসলাম জানান, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে সময় লাগবে । তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন যেন সবাই ইলিয়াস কাঞ্চনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ইলিয়াস কাঞ্চন এক উজ্জ্বল নাম । তার অভিনীত ‘ বেদের মেয়ে জোসনা’ এখনো ঢালিউডের অন্যতম সর্বাধিক ব্যবসাসফল সিনেমা। শুধু অভিনেতা নন, সমাজসেবক হিসেবেও তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের মাধ্যমে। সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক অর্জন করেছেন। ভক্ত ও দেশবাসীর দোয়া নিয়েই ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন এই প্রিয় নায়ক।